কারুবাক ডেস্ক :
খ্রিষ্টীয় ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। দিনটিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার গির্জাগুলোতে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জাসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা করা হয়। বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে।
বিভিন্ন ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন পালন করা হয়। এদিন সকাল থেকেই গির্জায় গির্জায় প্রার্থনায় অংশ নেন ভক্তরা। উপহার প্রদান, সংগীত, বড়দিনের কার্ড বিনিময়, গির্জায় ধর্মোপাসনা, ভোজ, এবং বড়দিনের বৃক্ষ, আলোকসজ্জা, মালা, মিসলটো, যিশুর জন্মদৃশ্য এবং হলি সমন্বিত এক বিশেষ ধরনের সাজসজ্জার প্রদর্শনী আধুনিককালে বড়দিন উৎসব উদযাপনের অঙ্গ।
রবিবার রাজধানীর কয়েকটি গির্জা ঘুরে দেখা যায়, বড়দিন পালন উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন গির্জার ফাদার, সিস্টারসহ অন্যরা। গির্জার সাজসজ্জা, আলোকসজ্জাসহ ধোয়া-মোছা, অডিটরিয়াম গোছানোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জপমালা রাণী গির্জার এক সিস্টারের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা টাইমসের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সিস্টার তার কাজের ফাঁকে বলেন, রবিবরা সন্ধ্যা ৬টা ও ৯টা মিশা। এরপর শোভাযাত্রা ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন তথা বড়দিন। ক্ষমা প্রাথর্না, বানি, অনুধ্যান, উপদেশ ও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রার্থনা ও যজ্ঞ অনুষ্ঠান করা হয়।
তিনি বলেন, বড়দিনে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের মাঝে উপহার বিতরণ হয়ে থাকে। স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, শুভেচ্ছা বিনিময়, একসঙ্গে দুপুরের খাবার আর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে খ্রিষ্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব-বড়দিন।
বড়দিনের উল্লেখযোগ্য খাবার হলো নানা ধরনের পিঠা। ঘরে অতিথি আপ্যায়ন ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন আর পাড়া প্রতিবেশীদেরও উপহার হিসেবে দেওয়া হয় এই পিঠা। এছাড়া গির্জায় সম্মিলিত ভোজের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় নানা রকমের মুখরোচক খাবার। পিঠার মধ্যে থাকে পাটিসাপটা, বিবিকা পিঠা, কুলি পিঠাসহ নানা পদের পিঠা।
কথা হয় রাজধানীর কাকরাইলে সেন্ট মেরি ক্যাথিড্রাল চার্চের সেমিনারিয়ান সুকান্ত ফ্রান্সেস রয়ের (২২) সঙ্গে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা। সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।