কারুবাক ডেস্ক
স্পেনের বাণিজ্য শহর বার্সেলোনায় স্পেন-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (বিজনেস ক্লাব বার্সেলোনা) ‘অভিষেক অনুষ্ঠান ২০২৩’ সম্পন্ন হয়েছে।
গত ৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) শহরের প্রাণকেন্দ্রে হোটেল সুনটেলের বলরুমে স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বার্সেলোনাসহ পার্শ্ববর্তী শহরের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত স্পেন-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাজিদ রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মিরন নাজমুলের পরিচালনায় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় অভিষেক অনুষ্ঠান।
এতে সহযোগী সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান খান কয়েশ এবং প্রথম সদস্য শফিক খান। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বার্সেলোনার সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ ও স্পেনের স্থানীয় প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতারা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বার্সেলোনার বাংলাদেশি কনস্যুলেটর সিনিয়র রামন পেদ্রো বেরনাউস, কাতালুনিয়ার পার্লামেন্টের সাবেক এমপি মারিয়া দান্তে, সাবেক সিনেটর রবের্তো মাসি, বার্সেলোনার সিটি কাউন্সিলর এসতের মিরাইয়েস, সিটি কমিশনার ইভান পেরা ইসরাত, সিউতাত ভেইয়ার কাউন্সিলর সোনিয়া বেলত্রান, সিউতাত ভেইয়া পৌরসভার কারিগরি উপদেষ্টা মারিয়া অ্যান্জেলেস সেসনেরোস হোরিলো।
এসময় বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের মিনিস্টার পলিটিক্যাল ও ডেপুটি চিপ আবদুর রউফ মন্ডল, লোকাল মিনিস্টার দীন মোহাম্মদ ইমাদুল হক, কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রেদোয়ান আহমেদ, লেবার উইং কাউন্সিলর মুতাছিমুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর নজরুল ইসলাম চৌধুরী নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদসহ সংগঠনের সকল সদস্যগণকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় সাজিদ রহমান (সোহেল গাজী) কে সভাপতি ও মিরন নাজমুলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩০ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ ঘোষণা করা হয়। পরে কার্যনির্বাহী পরিষদসহ সংগঠনের সদস্যদের সমবেত জাতীয় সংগীত, ফুল দিয়ে বরণ করে ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে অভিষিক্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশের বক্তব্য পর্বে রাষ্ট্রদূত সারওয়ার মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, আপনাদের পণ্যের গুণগত মান, গ্রাহকসেবার পাশাপাশি স্পেনিশ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নানা উদ্ভাবনী দেশীয় পণ্য সরবরাহ করতে পারলে, স্পেনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
তিনি ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি চালু হওয়া পেনশন স্কিম চালু করার কথা উল্লেখ করে এ সুবিধা নেওয়ার জন্যে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারকে প্রবাসবান্ধব সরকার বলে উল্লেখ করে, প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাস সর্বদা নিয়োজিত থাকবে বলেও নিশ্চিত করেন।
দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রেদওয়ান আহমেদ বলেন, শূন্য হাতে পরিশ্রম করে অল্প সময় সফল হয়েছেন প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। তিনি ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। সংগঠনের কার্যক্রম আরও বেগবান সুন্দর ও সংগঠিত হবে বলে তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সময় এসেছে আরও বৈচিত্র্যময় ও ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করার এবং সেজন্য ব্যবসায়ী সমাজকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন, স্পেন-বাংলা প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা নুরুল ওয়াহিদ, অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বকুল খান, মানবাধিকার কর্মী কামরুল মোহামদসহ অন্যান্যরা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, অফিস সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এ.কে. আজাদ মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন হারুন, অর্থ সম্পাদক জাফার হোসাইন, সহ-সভাপতি মোখলেছুর রহমান নাসিম, বখতিয়ার রহমান, সংগঠনের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন হক নেসা ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ড. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
সংগঠনের সভাপতি সাজিদ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মিরন নাজমুল এক বিবৃতিতে বলেন, ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া স্পেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ভবিষ্যতে সাংগঠনিক কার্যক্রম স্পেনজুড়ে বিস্তৃত করবে এবং ব্যবসায়ী শক্তিকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্যে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।
বক্তব্য অনুষ্ঠানের শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে শিশুদের নৃত্য পরিবেশন এবং প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী রাজু গাজী, অহনা দিবা ও অমি রহমান সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান শেষে সকল অতিথির জন্যে নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হয়।