8:16 pm, Sunday, 22 December 2024

রবীন্দ্রসঙ্গীতের শব্দ পাল্টে দিল পশ্চিমবঙ্গ: বিশিষ্টজনের অভিমত

  • কারুবাক
  • আপডেটের সময় : ০৮:৩০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 106 ভিউ

UNITED STATES - JUNE 21: The writer and poet Rabindranath Tagore (who receive Nobel Prize for Literature in 1913) expressed at the microphone of WABC Columbia on the theme "The World rebuilt by Youth" in India, on 20 November 1930, (Photo by Keystone-France/Gamma-Keystone via Getty Images)

শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক:

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন তার কালজয়ী গান ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান।’ সম্প্রতি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই গানকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়েছে, আর তাও কয়েকটি শব্দ বদলে।

এ নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছিল। গত মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ফিল্ম ফেস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গানটি পরিবেশনের পর সেই বিতর্ক যেন আরও বাড়ল। এদিন ‘বাঙালির প্রাণ, বাঙালির আশা’ বা ‘বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন’ অংশ দুটিকে ‘বাংলার’ করে গাওয়া হয়।

এরপর শনিবার বামঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছে। কমিটির সভাপতি পবিত্র সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক রজত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রবীন্দ্রনাথের গানের কথা পরিবর্তিত করে তা সরকারি অনুষ্ঠানে গাওয়ানো যে সম্ভব, তা আমাদের ধারণার অতীত ছিল।’

তবে শুধু তারাই নন। এ নিয়ে সমালোচনায় মুখর আরও অনেকেই। গত ২৯ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন নবান্নে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করার জন্য দিন ঠিক করতে বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনৈতিক দল এবং লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি প্রস্তাব রাখেন ওই গানটির শব্দ পরিবর্তন করা যায় কিনা তা ভেবে রাজ্যকে জানাতে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কবি জয় গোস্বামী।

তিনি বলেন, ওই বৈঠকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মতামত জানাতে বলা হয়েছিল। আমি ফোন করে তাকে বলি, রবীন্দ্রনাথের গানের কথা পরিবর্তন না করাই ভালো। রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি যদি আমরা দেখি, সেখানে দেখব অনেক কাটাকুটি, পরিবর্তন রবীন্দ্রনাথ নিজেই করেছেন। কিন্তু তার গান বা কবিতার শব্দ পরিবর্তনের একমাত্র অধিকার কেবল তারই।’

বৈঠকে উপস্থত কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন’— এই পাঁচটি সহজ শব্দে যে গভীরতা আছে, তা অনবদ্য। ভাই মানে শুধু সহোদর নয়, ভ্রাতৃসম, স্বদেশবাসী। বোন মানে শুধু সহোদরা নয়, বোনের মতো। সুতরাং যারা বাইরে থেকে এসে বাংলায় আছেন তারাও ভাই-বোন। এটাই হলো রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড ভারতী মানস। সুতরাং ‘বাঙালি’ কেটে ‘বাংলা’ করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। গীতবিতানে যা আছে তাই সবদিক থেকে ভালো।

 

#
জনপ্রিয়

রবীন্দ্রসঙ্গীতের শব্দ পাল্টে দিল পশ্চিমবঙ্গ: বিশিষ্টজনের অভিমত

আপডেটের সময় : ০৮:৩০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক:

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন তার কালজয়ী গান ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান।’ সম্প্রতি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই গানকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়েছে, আর তাও কয়েকটি শব্দ বদলে।

এ নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছিল। গত মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ফিল্ম ফেস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গানটি পরিবেশনের পর সেই বিতর্ক যেন আরও বাড়ল। এদিন ‘বাঙালির প্রাণ, বাঙালির আশা’ বা ‘বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন’ অংশ দুটিকে ‘বাংলার’ করে গাওয়া হয়।

এরপর শনিবার বামঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছে। কমিটির সভাপতি পবিত্র সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক রজত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রবীন্দ্রনাথের গানের কথা পরিবর্তিত করে তা সরকারি অনুষ্ঠানে গাওয়ানো যে সম্ভব, তা আমাদের ধারণার অতীত ছিল।’

তবে শুধু তারাই নন। এ নিয়ে সমালোচনায় মুখর আরও অনেকেই। গত ২৯ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন নবান্নে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করার জন্য দিন ঠিক করতে বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনৈতিক দল এবং লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি প্রস্তাব রাখেন ওই গানটির শব্দ পরিবর্তন করা যায় কিনা তা ভেবে রাজ্যকে জানাতে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কবি জয় গোস্বামী।

তিনি বলেন, ওই বৈঠকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মতামত জানাতে বলা হয়েছিল। আমি ফোন করে তাকে বলি, রবীন্দ্রনাথের গানের কথা পরিবর্তন না করাই ভালো। রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি যদি আমরা দেখি, সেখানে দেখব অনেক কাটাকুটি, পরিবর্তন রবীন্দ্রনাথ নিজেই করেছেন। কিন্তু তার গান বা কবিতার শব্দ পরিবর্তনের একমাত্র অধিকার কেবল তারই।’

বৈঠকে উপস্থত কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন’— এই পাঁচটি সহজ শব্দে যে গভীরতা আছে, তা অনবদ্য। ভাই মানে শুধু সহোদর নয়, ভ্রাতৃসম, স্বদেশবাসী। বোন মানে শুধু সহোদরা নয়, বোনের মতো। সুতরাং যারা বাইরে থেকে এসে বাংলায় আছেন তারাও ভাই-বোন। এটাই হলো রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড ভারতী মানস। সুতরাং ‘বাঙালি’ কেটে ‘বাংলা’ করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। গীতবিতানে যা আছে তাই সবদিক থেকে ভালো।