10:21 am, Monday, 23 December 2024

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির মুক্ত দিবস উদযাপন

  • কারুবাক
  • আপডেটের সময় : ০৭:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 119 ভিউ
শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক

নানা আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উদযাপন করেছে সাহিত্য একাডেমি। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়েছিল।

দিনটি স্মরণে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে স্থানীয় সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গিতাঙ্গন সরোদ মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো, আলোচনা, একক আবৃত্তি, বৃন্দ আবৃত্তি ও পুরস্কার বিতরণী আয়োজন করা হয়।

সাহিত্য একাডেমির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সাহিত্য একাডেমির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরারুন নবী মোবারক, সাহিত্য একাডেমির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য নন্দিতা গুহ, সদস্য আবদুর রহিম, সদস্য ফজিলাতুন্নাহার, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য ফারুক আহমেদ ভূঁইয়া, নির্বাহী সদস্য জামিনুর রহমান, তরী’র আহবায়ক শামীম আহমেদ ও সহকারী শিক্ষক রায়হানা ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোহেল আহাদ।

এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের মেঘনা ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ প্রবীণ আইনজীবি বীরমুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরারুন নবী মোবারককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সাহিত্য একাডেমির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জয়দুল হোসেন ও অতিথিরা।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হওয়ার পূর্বেও শহরটি পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তুপে। বিভিন্ন স্থানে পড়েছিল লাশ আর লাশ। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত হওয়ার পর মুক্তি বাহিনীর একটি কোম্পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ দিক থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হয়। ৭ ডিসেম্বর মধ্যে পাক বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে। সকালে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জায়দুল হোসেন বলেন, ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ১১ হানাদার নিহত হয় এবং শহীদ হন তিন মুক্তিযোদ্ধা।  ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়ে পড়ে।  মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে।  ৬ ডিসেম্বর রাত থেকেই তাদের পালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৭ ডিসেম্বর বিকালের আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাঁধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে। মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত হবার পর মানুষ ছুটতে থাকে নিখোঁজ হওয়া সজনদের খোঁজে। এক এক করে কুরুলিয়ার পাড়ে, শিমরাইল কান্দি, সরকারি কলেজের পেছনে। দাতিয়ারা চাদমারী, পৈরতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায় গণকবরসমূহের।

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সাহিত্য একাডেমির সদস্য ঈশ্বরী রায় চৌধুরী, পূণ্যশ্রী রায় মুগ্ধ, আঁখি আক্তার, মুশতারি জান্নাত ও তৌসিফ আহমেদ।

কবি জয়দুল হোসেনের কবিতা অবলম্বনে আহসান উল্লাহ্ তমাল এর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘তোমাকে ধারণ করতে পারিনি বলে’ এবং নুসরাত বুশরার নির্দেশনায় ফজল সাহাবউদ্দিনের ‘বাংলাদেশ একাত্তর’ বৃন্দ-আবৃত্তি পরিবেশন করে সাহিত্য একাডেমির আবৃত্তি দল। পরে শুদ্ধ বানান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

 

#
জনপ্রিয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির মুক্ত দিবস উদযাপন

আপডেটের সময় : ০৭:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক

নানা আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উদযাপন করেছে সাহিত্য একাডেমি। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়েছিল।

দিনটি স্মরণে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে স্থানীয় সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গিতাঙ্গন সরোদ মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো, আলোচনা, একক আবৃত্তি, বৃন্দ আবৃত্তি ও পুরস্কার বিতরণী আয়োজন করা হয়।

সাহিত্য একাডেমির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সাহিত্য একাডেমির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরারুন নবী মোবারক, সাহিত্য একাডেমির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য নন্দিতা গুহ, সদস্য আবদুর রহিম, সদস্য ফজিলাতুন্নাহার, পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য ফারুক আহমেদ ভূঁইয়া, নির্বাহী সদস্য জামিনুর রহমান, তরী’র আহবায়ক শামীম আহমেদ ও সহকারী শিক্ষক রায়হানা ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোহেল আহাদ।

এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের মেঘনা ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ প্রবীণ আইনজীবি বীরমুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরারুন নবী মোবারককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সাহিত্য একাডেমির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জয়দুল হোসেন ও অতিথিরা।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হওয়ার পূর্বেও শহরটি পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তুপে। বিভিন্ন স্থানে পড়েছিল লাশ আর লাশ। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত হওয়ার পর মুক্তি বাহিনীর একটি কোম্পানি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ দিক থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হয়। ৭ ডিসেম্বর মধ্যে পাক বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে। সকালে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কবি জায়দুল হোসেন বলেন, ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ১১ হানাদার নিহত হয় এবং শহীদ হন তিন মুক্তিযোদ্ধা।  ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়ে পড়ে।  মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে।  ৬ ডিসেম্বর রাত থেকেই তাদের পালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৭ ডিসেম্বর বিকালের আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাঁধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে। মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত হবার পর মানুষ ছুটতে থাকে নিখোঁজ হওয়া সজনদের খোঁজে। এক এক করে কুরুলিয়ার পাড়ে, শিমরাইল কান্দি, সরকারি কলেজের পেছনে। দাতিয়ারা চাদমারী, পৈরতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায় গণকবরসমূহের।

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সাহিত্য একাডেমির সদস্য ঈশ্বরী রায় চৌধুরী, পূণ্যশ্রী রায় মুগ্ধ, আঁখি আক্তার, মুশতারি জান্নাত ও তৌসিফ আহমেদ।

কবি জয়দুল হোসেনের কবিতা অবলম্বনে আহসান উল্লাহ্ তমাল এর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ‘তোমাকে ধারণ করতে পারিনি বলে’ এবং নুসরাত বুশরার নির্দেশনায় ফজল সাহাবউদ্দিনের ‘বাংলাদেশ একাত্তর’ বৃন্দ-আবৃত্তি পরিবেশন করে সাহিত্য একাডেমির আবৃত্তি দল। পরে শুদ্ধ বানান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।