7:39 pm, Sunday, 22 December 2024

যে আবিষ্কার ২২ বছর গোপন রেখেছিল নিউটন?

  • কারুবাক
  • আপডেটের সময় : ০৬:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 53 ভিউ
শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক :

একটা আবিষ্কার কতদিন লুকিয়ে রাখা যায়? লুকিয়ে রাখারই বা দরকার কি? আবিষ্কার প্রকাশ করলেই না সেটা সম্পর্কে মানুষ জানবে। সেটা বুঝবে, শিখবে। এজন্যই তো বিজ্ঞানীরা নানা তত্ত্ব, নানা যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেন। কিন্তু নিউটন ছিলেন একেবারে অন্য মানুষ।

নিজের আবিষ্কার লুকিয়ে রাখতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। অন্য বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস করতেন না নিউটন। ভাবতেন সবাই বুঝি তাঁর আবিষ্কার মেরে দেযার জন্য ওঁৎপেতে আছে।

বিজ্ঞনী হ্যালি ছিলেন প্রাণের বন্ধু। সেই হ্যালি, যাঁর নামে একটা ধূমকেতু আছে। হ্যালি প্রায়ই নিউটনের বাড়িতে যেতেন আড্ডা দিতে। দুই বন্ধু পরস্পরকে নানা বিষয়ে সাহায্য-টাহায্য করতেন। চলত খোসগল্পও। তাঁরা দুজনই বড় বিজ্ঞানী। তাই বিজ্ঞানের ব্যাপার-স্যাপার নিয়েই আলোচনা হতো তাঁদের।

১৬৮৭ সাল। হ্যালি আড্ডা দিচ্ছেন নিউটনের বাড়িতে। কথায় কথায় বিজ্ঞানের এক অমীমাংসিত রহস্য নিয়ে আলেচানা শুরু হলো।

বিষয়টা হলো, সূর্যের চারপাশে গ্রহগুলো ঘোরে কোন নিয়মে? এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে চারদিকে। সমাধান আর মিলছে না। নিউটন হ্যালিকে বললেন, ‘অত বিচলিত হবার কিছু নেই, বন্ধু। এ সমস্যার সমাধান আমি বাইশ বছর আগেই করে ফেলেছি।’

তাজ্জব বনে গেলেন হ্যালি। বলে কি নিউটন! রোজ দুজন আড্ডা দেন। অথচ এতগুলো বছরে বন্ধুর কাজের খবর বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেননি! হ্যালি বললেন, ‘বাইশ বছর আগেই যদি সমাধান করে থাক, প্রকাশ করছ না কেন?’

নিউটন তখন আশঙ্কা আর সন্দেহের কথা বললেন। তাঁর মনে হয়েছে, এসব কথা পাঁচকান হয়ে গেলে আবিষ্কার চুরি হওয়ার আশঙ্কা আছে। হ্যালি বন্ধুকে অভয় দিলেন। তারপর অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিউটনের বাইশ বছর আগে করা কাজগুলো বই আকারে প্রকাশ করলেন। এটিই নিউটনরে সেই বিখ্যাত বই ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’। আর যে নিয়মের কথা হ্যালি বলেছিলেন সেটা হলো পদার্থবিজ্ঞানের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। নিউটনের ‘মহাকর্ষ সূত্র’ নামে তার খ্যাতি জগৎজোড়া। শুধু মহাকর্ষ সূত্রই নয়। ওই বইয়ে নিউটনের গতি তত্ত্ব, গ্যালিলিওর পড়ন্ত বস্তুর সূত্রের ব্যাখ্যাও ছিল। ওই বইয়ের মাধ্যমেই জন্ম হয়েছিল আধুনিক বলবিদ্যার। বইটি নিউটন লিখেছিলেন মাত্র দুবছরে। ১৬৬৫ থেকে ১৬৬৭ সালের মধ্যে। হ্যালির প্রচেষ্টায় সেটা প্রকাশিত হয় ১৬৮৭ সালে।

সূত্র: ফিজিকস ওয়ার্ল্ড; নিউ সায়েন্টিস

 

#
জনপ্রিয়

যে আবিষ্কার ২২ বছর গোপন রেখেছিল নিউটন?

আপডেটের সময় : ০৬:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শেয়ার করুন

কারুবাক ডেস্ক :

একটা আবিষ্কার কতদিন লুকিয়ে রাখা যায়? লুকিয়ে রাখারই বা দরকার কি? আবিষ্কার প্রকাশ করলেই না সেটা সম্পর্কে মানুষ জানবে। সেটা বুঝবে, শিখবে। এজন্যই তো বিজ্ঞানীরা নানা তত্ত্ব, নানা যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেন। কিন্তু নিউটন ছিলেন একেবারে অন্য মানুষ।

নিজের আবিষ্কার লুকিয়ে রাখতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। অন্য বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস করতেন না নিউটন। ভাবতেন সবাই বুঝি তাঁর আবিষ্কার মেরে দেযার জন্য ওঁৎপেতে আছে।

বিজ্ঞনী হ্যালি ছিলেন প্রাণের বন্ধু। সেই হ্যালি, যাঁর নামে একটা ধূমকেতু আছে। হ্যালি প্রায়ই নিউটনের বাড়িতে যেতেন আড্ডা দিতে। দুই বন্ধু পরস্পরকে নানা বিষয়ে সাহায্য-টাহায্য করতেন। চলত খোসগল্পও। তাঁরা দুজনই বড় বিজ্ঞানী। তাই বিজ্ঞানের ব্যাপার-স্যাপার নিয়েই আলোচনা হতো তাঁদের।

১৬৮৭ সাল। হ্যালি আড্ডা দিচ্ছেন নিউটনের বাড়িতে। কথায় কথায় বিজ্ঞানের এক অমীমাংসিত রহস্য নিয়ে আলেচানা শুরু হলো।

বিষয়টা হলো, সূর্যের চারপাশে গ্রহগুলো ঘোরে কোন নিয়মে? এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে চারদিকে। সমাধান আর মিলছে না। নিউটন হ্যালিকে বললেন, ‘অত বিচলিত হবার কিছু নেই, বন্ধু। এ সমস্যার সমাধান আমি বাইশ বছর আগেই করে ফেলেছি।’

তাজ্জব বনে গেলেন হ্যালি। বলে কি নিউটন! রোজ দুজন আড্ডা দেন। অথচ এতগুলো বছরে বন্ধুর কাজের খবর বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেননি! হ্যালি বললেন, ‘বাইশ বছর আগেই যদি সমাধান করে থাক, প্রকাশ করছ না কেন?’

নিউটন তখন আশঙ্কা আর সন্দেহের কথা বললেন। তাঁর মনে হয়েছে, এসব কথা পাঁচকান হয়ে গেলে আবিষ্কার চুরি হওয়ার আশঙ্কা আছে। হ্যালি বন্ধুকে অভয় দিলেন। তারপর অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিউটনের বাইশ বছর আগে করা কাজগুলো বই আকারে প্রকাশ করলেন। এটিই নিউটনরে সেই বিখ্যাত বই ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’। আর যে নিয়মের কথা হ্যালি বলেছিলেন সেটা হলো পদার্থবিজ্ঞানের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। নিউটনের ‘মহাকর্ষ সূত্র’ নামে তার খ্যাতি জগৎজোড়া। শুধু মহাকর্ষ সূত্রই নয়। ওই বইয়ে নিউটনের গতি তত্ত্ব, গ্যালিলিওর পড়ন্ত বস্তুর সূত্রের ব্যাখ্যাও ছিল। ওই বইয়ের মাধ্যমেই জন্ম হয়েছিল আধুনিক বলবিদ্যার। বইটি নিউটন লিখেছিলেন মাত্র দুবছরে। ১৬৬৫ থেকে ১৬৬৭ সালের মধ্যে। হ্যালির প্রচেষ্টায় সেটা প্রকাশিত হয় ১৬৮৭ সালে।

সূত্র: ফিজিকস ওয়ার্ল্ড; নিউ সায়েন্টিস