3:23 am, Thursday, 19 September 2024

পর্দা নামলো বইমেলার, বিক্রি ৬০ কোটি টাকা, নতুন বই ৩৭৫১টি

  • কারুবাক
  • আপডেটের সময় : ০৫:৩৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • 120 ভিউ
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছরের মতো পর্দা নামলো অমর একুশে বইমেলার। শনিবার (২ মার্চ) ছিল মেলার শেষ দিন। এদিন বেলা ১১টায় শুরু হয়ে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিনে লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল বই বেচাকেনার হিড়িক।

সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবারের মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। রাত ৯টায় শেষ হয়েছে মেলার কার্যক্রম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ।

সমাপনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের বইমেলায় ৬০ কোটিও বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার বই। এ বছর মোট বই প্রকাশিত হয়েছে তিন হাজার ৭৫১টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৭৩০টি৷

এদিন সকাল থেকে মেলায় লোকসমাগম কম হলেও বিকেলে লেখক-পাঠক ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিদায়বেলায় স্টলগুলোতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন প্রকাশনী ক্রেতাদের জন্য ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড় দেয়।

তামিম নামের একজন পাঠক বলেন, শেষ দিনে ভিড় কম ছিল। স্বাচ্ছন্দ্যে বই খুঁজতে পেরেছি।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, এবার ১ মার্চ পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৬০ লাখের কাছাকাছি। এবার ৬০০টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। এবারের মেলায় ৯ শতাধিক স্টল ও ৬৭০টি প্রকাশনী অংশ নেয়।

প্রথা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন পর্দা নামে অমর একুশে বইমেলার। অধিবর্ষ হওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাস ছিল ২৯ দিনে। মাসের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। পরের দুদিন শুক্র ও শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। প্রকাশকদের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেলার সময় দুদিন বাড়িয়ে ২ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। ফলে এবারের বইমেলা হয় ৩১ দিনব্যাপী।

 

৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি

চলতি বছরের (২০২৪) অমর একুশে বইমেলায় ৬০ কোটির বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় অন্তত ১৩ কোটি টাকা বেশি। গত বছর মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার।

এদিকে, গত দুই বছরের তুলনায় অমর একুশে বইমেলায় বইয়ের বিক্রি বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এই বিক্রি ১৩ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ কোটিতে, যা ২০২২ সালের তুলনায় বেড়েছে সাড়ে সাত কোটি। যদিও দেশে করোনা অতিমারির শুরুর আগের মাসের বিক্রির তুলনায় এই বৃদ্ধিকে বলা চলে নগণ্য। কারণ, সে বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে বিক্রি হয়েছিল ৮২ কোটি টাকার বই।

জানা গেছে, এবারের অমর একুশে বইমেলাতে প্রায় ৬০ কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মেলাতে প্রবেশ করেছে। আজ শনিবার (২ মার্চ) বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলামের পক্ষে একাডেমির প্রশাসন উপবিভাগের উপ-পরিচালক ড. সাহেদ মন্তাজ এ তথ্য জানান।

করোনা অতিমারির পর ২০২১ সালে বইয়ের বিক্রি কমে মাত্র তিন কোটি ১১ লাখ টাকায় নেমে আসে। ২০২২ সালে ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়। ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়।

নবনিযুক্ত সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান রাজধানীর বেইলি রোডে নিহতদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনী আয়োজনে এসেছিলাম। জীবনে চিন্তাও করিনি বইমেলার সমাপনী আয়োজনে আমি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে হাজির হবো।

নতুন দায়িত্ব পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে নাহিদ ইজাহার খান বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। কোনো প্রমিজে বিশ্বাস করি না, কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। প্রতিশ্রুতি তো ভঙ্গ হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে যদি একটি টিমওয়ার্ক করতে পারি, তাহলে কাজটি ভালো হবে।’

বইমেলা স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা এখন ঐতিহ্য হয়ে গেছে। এই বইমেলা সরানোর বিষয়ে কথা উঠেছে। আমরা কোনো না কোনো ব্যবস্থা করে বইমেলা এখানে রাখার ব্যবস্থা করবো।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবী ঘুরে এসেও এমন একটি বইমেলা খুঁজে পাবেন না। এ বইমেলা আমাদের আবেগের মেলা, জাতিসত্তার মেলা। এই বইমেলা জাতি হয়ে ওঠার বইমেলা, আমাদের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসার বইমেলা।

 

প্রকাশিত হয়েছে ৩৭৫১টি বই

এবারের অমর একুশে বইমেলায় তিন হাজার ৭৫১টি বই প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা। শনিবার মেলার ৩১তম ও শেষ দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘এ বছর তিন হাজার ৭৫১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আগামী বছর আরও সফল মেলা আয়োজন করা হবে।’

 

 

 

#
জনপ্রিয়

পর্দা নামলো বইমেলার, বিক্রি ৬০ কোটি টাকা, নতুন বই ৩৭৫১টি

আপডেটের সময় : ০৫:৩৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছরের মতো পর্দা নামলো অমর একুশে বইমেলার। শনিবার (২ মার্চ) ছিল মেলার শেষ দিন। এদিন বেলা ১১টায় শুরু হয়ে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিনে লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল বই বেচাকেনার হিড়িক।

সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবারের মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। রাত ৯টায় শেষ হয়েছে মেলার কার্যক্রম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ।

সমাপনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের বইমেলায় ৬০ কোটিও বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার বই। এ বছর মোট বই প্রকাশিত হয়েছে তিন হাজার ৭৫১টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৭৩০টি৷

এদিন সকাল থেকে মেলায় লোকসমাগম কম হলেও বিকেলে লেখক-পাঠক ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিদায়বেলায় স্টলগুলোতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন প্রকাশনী ক্রেতাদের জন্য ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড় দেয়।

তামিম নামের একজন পাঠক বলেন, শেষ দিনে ভিড় কম ছিল। স্বাচ্ছন্দ্যে বই খুঁজতে পেরেছি।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, এবার ১ মার্চ পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৬০ লাখের কাছাকাছি। এবার ৬০০টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। এবারের মেলায় ৯ শতাধিক স্টল ও ৬৭০টি প্রকাশনী অংশ নেয়।

প্রথা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন পর্দা নামে অমর একুশে বইমেলার। অধিবর্ষ হওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাস ছিল ২৯ দিনে। মাসের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। পরের দুদিন শুক্র ও শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। প্রকাশকদের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেলার সময় দুদিন বাড়িয়ে ২ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। ফলে এবারের বইমেলা হয় ৩১ দিনব্যাপী।

 

৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি

চলতি বছরের (২০২৪) অমর একুশে বইমেলায় ৬০ কোটির বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় অন্তত ১৩ কোটি টাকা বেশি। গত বছর মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকার।

এদিকে, গত দুই বছরের তুলনায় অমর একুশে বইমেলায় বইয়ের বিক্রি বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এই বিক্রি ১৩ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ কোটিতে, যা ২০২২ সালের তুলনায় বেড়েছে সাড়ে সাত কোটি। যদিও দেশে করোনা অতিমারির শুরুর আগের মাসের বিক্রির তুলনায় এই বৃদ্ধিকে বলা চলে নগণ্য। কারণ, সে বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে বিক্রি হয়েছিল ৮২ কোটি টাকার বই।

জানা গেছে, এবারের অমর একুশে বইমেলাতে প্রায় ৬০ কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মেলাতে প্রবেশ করেছে। আজ শনিবার (২ মার্চ) বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলামের পক্ষে একাডেমির প্রশাসন উপবিভাগের উপ-পরিচালক ড. সাহেদ মন্তাজ এ তথ্য জানান।

করোনা অতিমারির পর ২০২১ সালে বইয়ের বিক্রি কমে মাত্র তিন কোটি ১১ লাখ টাকায় নেমে আসে। ২০২২ সালে ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়। ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়।

নবনিযুক্ত সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান রাজধানীর বেইলি রোডে নিহতদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনী আয়োজনে এসেছিলাম। জীবনে চিন্তাও করিনি বইমেলার সমাপনী আয়োজনে আমি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে হাজির হবো।

নতুন দায়িত্ব পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে নাহিদ ইজাহার খান বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। কোনো প্রমিজে বিশ্বাস করি না, কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। প্রতিশ্রুতি তো ভঙ্গ হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে যদি একটি টিমওয়ার্ক করতে পারি, তাহলে কাজটি ভালো হবে।’

বইমেলা স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা এখন ঐতিহ্য হয়ে গেছে। এই বইমেলা সরানোর বিষয়ে কথা উঠেছে। আমরা কোনো না কোনো ব্যবস্থা করে বইমেলা এখানে রাখার ব্যবস্থা করবো।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবী ঘুরে এসেও এমন একটি বইমেলা খুঁজে পাবেন না। এ বইমেলা আমাদের আবেগের মেলা, জাতিসত্তার মেলা। এই বইমেলা জাতি হয়ে ওঠার বইমেলা, আমাদের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসার বইমেলা।

 

প্রকাশিত হয়েছে ৩৭৫১টি বই

এবারের অমর একুশে বইমেলায় তিন হাজার ৭৫১টি বই প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা। শনিবার মেলার ৩১তম ও শেষ দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘এ বছর তিন হাজার ৭৫১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আগামী বছর আরও সফল মেলা আয়োজন করা হবে।’