ভাষান্তর : রেজওয়ান ইসলাম
তিনি ভেতরে গিয়েছেন,সুতরাং তার আবার বের না হয়ে উপায় নেই।সেখানে শুধু মেঝের কার্পেট আর আয়না ছিল। কিন্তু খদ্দের তিন ঘন্টা ধরে পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে ছিলেন।
তিনি সেখানে কি করছিলেন? অবশ্যই মাঝ বিকেল থেকে বিরতিহীন ভাবে আমাদের পোশাক বদলাচ্ছিলেন।যখনই আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি,“ভেতরে আপনি কি করছেন ম্যাডাম?”তিনি তৎক্ষনাৎ জবাব দিয়েছেন,“আমি কেবল পোশাক পরিবর্তন করছি।”যখন কোন খদ্দের এরকম বলে,আবার জিজ্ঞেস করার আগে আপনাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে-কারণ তারা যদি আবার বলে,“আমি কেবল পোষাক পরিবর্তন করছি।”সেটা বিব্রতকর বোধ হবে এবং তুমি তাকে তাড়া দিচ্ছ এরকম শোনাবে।অধিকন্তু তারা হয়তো বিরক্তিকর ভাবে আভাস দেবে যে তারা তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করছে এবং তারা চায় তুমি যেন তাদেরকে একা কাজ করতে দাও।
পোশাক পরিবর্তনের কক্ষ থেকে খদ্দেরের বের না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখলে,একটা সম্ভাবনা থাকে যে তারা আসলে পোশাক বদলেছে কিন্তু পোশাকটা সুবিধার না।এরকম আমারও হয়:পৃথিবীতে এমন অনেক পোশাক আছে যে,যে মুহূর্তে তুমি সেগুলো পড়বে, তোমার এত খারাপ বোধ হবে যে তুমি শুধু তোমার সামনের আয়না ভেঙে ফেলতে চাইবে।যেহেতু সেখানে তোমার প্রতিবিম্ব অবাক হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবে।এরকম পোশাক তোমাকে মনে করিয়ে দিবে তুমি মজা করছো এবং সবসময়ই তোমাকে ভাড়ের মতো দেখায়।যদিও তোমার হাটু কাঁপবে এটা ভেবে যে সেই মুহূর্ত পর্যন্ত তোমার সমগ্র জীবন একটা বিব্রতকর ভুল।
প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটাই কারণ।যে দোকানে আমি কাজ করি সেটা প্রধানত নামী ফ্যাশন কোম্পানির সামান্য অদ্ভুত পোশাক বিক্রি করে যা মালিক বিদেশ থেকে কিনে আনে।সুতরাং এটা অস্বাভাবিক নয় যে খদ্দের কোন কিছু পরে,কিন্তু বুথ থেকে বের হয়ে বড় আয়নায় নিজেদের দেখতে দ্বিধা বোধ করে।আমাদের পোশাক কোনভাবেই কম দামি না,সুতরাং যখন সেরকম ঘটনা ঘটে,আমরা ক্রেতাকে একা ছেড়ে দেই এবং চেঞ্জিং রুমের ভিতরেই যেন মনস্থির করতে পারে সেজন্য তাদের প্রচুর সময় দেই।সুতরাং আমি ড্রয়ারের জিনিষ-পত্র নাড়াচাড়া করছিলাম,গুদাম ঘর চেক করছিলাম এবং আবার খোজ নেওয়ার আগে কিছু সময়ক্ষেপণ করছিলাম।কিন্তু তিনি আসলেই অনেক দীর্ঘ সময় নিচ্ছিলেন।
যখন আমি আর নিতে পারছিলাম না,আমি পর্দার ওপাশ থেকে বললাম,আমি কি আপনাকে আদৌ কোনভাবে সাহায্য করতে পারি?”
“না,আমি ঠিক আছি,” একটু বিরক্তির সাথে খদ্দের বললো।“এই পোশাকটার চেয়ে আটপৌরে আর কোন পোশাক কি আপনাদের নেই?এটা খুব বেশী দাওয়াতে যাওয়ার উপযোগী,আমি এটা সবখানে পরতে পারব না।”
এক্ষেত্রে আমি তাকে সূক্ষ,প্রায় ঈষদচ্ছ ছাপা হালকা সিল্কের পোশাকের কথা বললাম ও এনে দিলাম।এটা প্যারিসের।তারা সুন্দর জটিল আধুনিক রঙের অনেক ছাপা পোশাক বানায়।ক্রেতা পর্দার পিছন থেকে হাত বাড়িয়ে পোশাকের হ্যাঙ্গার ধরে, পোশাকটা পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে টেনে নিয়ে গেল।তার পোশাক পরিবর্তনের সময় দীর্ঘক্ষণ খসখস শব্দ হল।আমি ভাবলাম আমার কি চলে যাওয়া উচিত এবং অন্য কাজ করা উচিত,কিন্তু আমি অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।দোকানের নিয়ম হল দোকানে থাকার সময় একজন ক্রেতার সাথে পুরো সময় জুড়ে একজন নির্দিষ্ট কর্মচারীই থাকবে।আমাদের অনেক পোশাকই দেখে পছন্দ করা কষ্টকর,তাই আমরা প্রত্যেক ক্রেতার সাথে আলাদা ভাবে কাজ করি যাতে যে স্টাইলটি তাদের সবচেয়ে ভালো মানায় সেটি তারা খুজে পায়।
এজন্য প্রথমে তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে তোমার ক্রেতা কি রকম।তাদের বয়স কেমন?কত লম্বা?তাদের ব্যক্তিত্ব কেমন?আমি ঠিক যখন আমার একজন নিয়মিত খদ্দের কে বিলাতী চা পরিবেশন করছিলাম,এই খদ্দের ভেতরে এসেছে,সুতরাং আমি যা দেখেছি তা হল খদ্দেরের হাত পর্দা বন্ধ করছে এবং বলছে,“ আমি এটা পরছি।”
“কোন সাইজের পোশাক আপনি সাধারণত পরেন?”
“আমি ভুলে গেছি। মনে করা কঠিন।”
সম্ভবত তিনি খুব লাজুক এবং কিছু পত্রিকায় আমাদের বিজ্ঞাপন দেখে অনেক সাহস করে আমাদের বুটিকে এসেছেন।সম্ভবত তার উচ্চতা বা ওজনের জন্য আমাদের সামনে আসতে চান না এবং নিরাপদে বুথ ছাড়ার সুযোগ হারিয়েছেন।
আপনি কি পাজামার মত কিছু পছন্দ করেন ম্যাডাম,অথবা আপনি কি প্রায়ই স্কার্ট পড়েন?”
“মাঝে মাঝে আমি স্কার্ট পরি এবং মাঝে মাঝে আমি পায়জামা পরি।”
আরেকটা সম্ভাবনা ছিল যে তিনি সম্প্রতি প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন এবং পোশাক বদলানোর সময় তার চেহারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।ঠিক এই মুহূর্তে তিনি সম্ভবত তার সিলিকন ঠিক করার চেষ্টা করছেন।যখন আমি তরুণ ছিলাম তখন আমি এক মহিলার বাইরে ছুটি কাটানোর সময় পোশাক বদলানোর কক্ষ থেকে অদৃশ্য হওয়ার গল্প শুনেছিলাম।কক্ষের মেঝেতে একটা গোপন দরজা ছিল এবং মানুষ পাচারকারীদের কাছে সোজা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল।সম্ভবত আমার খদ্দেরকে এই গল্প বলে ভয় দেখিয়ে পোশাক বদলানোর কক্ষ থেকে বের করতে পারতাম।“দয়া করে বাইরে বেরিয়ে আসুন এবং এখানকার বড় আয়নায় দেখুন!” বলে আহত করার চেয়ে এটা সম্ভবত সত্যিকারের ভালো গ্রাহক সেবা হতো।
‘আপনি কি আজকের কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে?’
‘পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন কিছু করার আছে?’
অথবা যদি এমন হয় পোশাক বদলানোর কক্ষে অপমানিত হওয়া একজন মহিলা,আলাদা ভাবে কর্মচারীর উপর প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে আমাদের আতঙ্কিত করে।যখনই আমি রাস্তা দিয়ে হাটি এবং আমার পিছনে হাই হিলের শব্দ শুনি আমি জমে যাই।খদ্দেররা যাই পড়ুক না কেন তাদের ক্রমাগত “চমৎকার!” বা “এটায় আপনাকে খুব ভালো দেখাচ্ছে।” বলার অপরাধ-বোধ থেকে এমনটা মনে হয়।
রাত ৮ টায় দোকান বন্ধের সময়ও তিনি সেখানে ছিলেন।আমি কয়েকবার তার খোজ নিয়েছি কিন্তু লাভ হয়নি।আমি নিজে পর্দা সরাতে পারতাম না,সুতরাং “ম্যাডাম, আপনি সময় নিন এবং মনস্থির করুন।” বলা ছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না।খদ্দের ভেতরে খসখস শব্দ করে যাচ্ছিল,কখনও-সখনও আমি তার বিড়বিড়ানি শুনেছি “ওহ, আমার!” অথবা “হুম আচ্ছা।”তিনি একের পর এক প্রত্যেক পোশাকের সব সাইজ এবং সব রঙ আনার অনুরোধ করছিলেন।তার চাওয়া প্রত্যেক পোশাক স্টোর রুমে দ্রুত খুঁজতে খুঁজতে আমি ভাবলাম তার ঘটনাটা কি,কোন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের জন্য তিনি এমন নিষ্ঠার সাথে কেনাকাটা করতে পারেন।আমি ম্যানেজারের কাছে স্টোরের চাবিটা চাইলাম।আমার খদ্দের যা খুঁজছে তা খুঁজে পেতে সাহায্য করার জন্য আমি আর সব কর্মচারী বাড়ি চলে যাওয়ার পর দোকানে থেকে যেতে মনস্থির করেছি।আমাদের নিয়মিত খদ্দেররা শুধু একটা ফোন কলের মাধ্যমে যেকোন সময় তাদের প্রিয় কর্মচারীকে তাদের কাজের সময় পেয়ে যেত,সুতরাং শুধু একজন খদ্দেরের জন্য আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা দোকান খোলা রাখতাম।
মধ্যরাত্রি নাগাদ আমার খদ্দের দোকানের প্রত্যেক টুকরা কাপড় বদলে পড়া শেষ করেছে।কোনটি সে পছন্দ করবে?আমি এক কাপ চা বানালাম এবং শেষ পর্যন্ত তার বের হওয়ার কথা ভেবে সোফার পাশে রাখলাম।কিস্তু ব্যাপারটা সেরকম হলো না-যে পোশাক পরে তিনি এসেছিলেন সেটি পরে তিনি পোশাক বদলানোর কক্ষ থেকে বের হয়ে এলেন না।তার বদলে তিনি বললেন প্রথমবার যে পোশাক তিনি পরেছিলেন সেটা আবার পরে দেখতে চান।তারপর দোকানের প্রত্যেক পোশাক নিয়ে তিনি একই কাজ করতে চাইলেন।রাত ৩ টার দিকে আমার শক্তি সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেল।
পরদিন সকালে আমি যখন দোকানের সোফার উপর জেগে উঠলাম,খদ্দেরটি তখনও পোশাক বদলানোর কক্ষে ছিল।তিনি সারা রাত পরে থাকা যায় এমন কিছু খোজার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।আহারে বেচারা!তার জন্য আমার হৃদয়ে কোমল স্থান গড়ে উঠছিল।আমি বুদ্ধি করে স্থানীয় ব্যাকারিতে দৌড়ে গেলাম যেটা সকাল ৬ টায় খোলে এবং কিনে আনা ব্যাগেল ও ক্যাফে আও ল্যাইট পর্দার নীচে রেখে বললাম,“দয়া করে নিজেকে সাহায্য করুন।”তিনি সাড়া দিলেন না কিন্তু পরের বার যখন তাকালাম তখন দেখলাম সেগুলো অদৃশ্য হয়ে গেছে,সুতরাং আমি ধরে নিলাম তিনি সেখানে সেগুলো পেয়ে গেছেন।
আমি আমার মেক-আপ ঠিক করে নিলাম এবং অন্য কর্মচারী আসার আগেই আমি আমার লকারে থাকা কিছু বাড়তি পোশাক বদলিয়ে পড়ে নিলাম।কর্মচারীরা অবাক হয়ে কিন্তু কৃতজ্ঞতার সাথে বললো,“এটা তোমার গতকালের খদ্দের। তাই না?যখন আমি বললাম,“আমি জানি।তিনি প্রথম জিনিসটাই আমাকে খুলে দিতে বলেছিলেন।” তারা আর বেশী খোজ করলো না।মধ্য বিকেল নাগাদ আমার সংগ্রহ থেকে আনা সকল পোশাক তিনি তিনি দ্বিতীয় বারের মত পরে শেষ করে ফেলেছেন,কিন্তু স্পষ্টত তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না।আমি দৌড়ে নিকটবর্তী ফ্যাশন আউট-লেটে গেলাম এবং তার জন্য ডজন খানেক পোশাক কিনলাম।আরও কিছু খদ্দের আমাদের বুটিকে এসেছিল কিন্তু আমি তাদের দেখাশোনার জন্য আমার সহকর্মিদের উপর ছেড়ে দিলাম এবং যেহেতু সেখানে আরও দুটো পোশাক বদলের কক্ষ আছে, আমার অদ্ভুত খদ্দেরকে কেউ লক্ষ্য করছে বলে মনে হল না।
কিন্তু আমার কেনা কোন পোশাকই তিনি পছন্দ করলেন না,সুতরাং আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে পোশাক বদলানোর কক্ষ ও সবকিছু সহ তাকে অন্য দোকানে নিয়ে যাব।আমার স্মরণে আসলো যে আমাদের মালিক সময়ে সময়ে বুটিকের রুপ-সজ্জা পরিবর্তন করতে ভালোবাসেন।সুতরাং আমাদের পোশাক বদলানোর কক্ষ চাকার মাধ্যমে চলাচল করতে পারে।
বাকি মেয়েদের একজনকে আমি বললাম,“সবাইকে বলে দিয়ো আমি কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যাব।” এবং কাঁধের চারপাশে দড়ি বেধে নিলাম।এটা ভারি ছিল, কিন্তু সামনে টেনে নেওয়া অসম্ভব ছিল না।আমি পোশাক বদলানোর কক্ষ টেনে নিয়ে শহরের মধ্যে যাত্রা শুরু করলাম।প্রকাশ্য দিবালোকে এরকম একটা জিনিস টেনে নেওয়ায় লোকজন তাকাবে-এজন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম কিন্তু কেউই দ্বিতীয়বার তাকালো বলে মনে হল না।আমি ধারনা করি তারা ভেবেছিল আমরা কোন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম বা কোন ফটোশুট করছিলাম।কক্ষের ভেতর আমার খদ্দের, যাকে সন্তুষ্ট করা খুব কঠিন,সন্দিহান বলে মনে হল।কারণ সে বললো,“আমার জন্য তোমাকে এত ঝামেলা পোহানোর দরকার নেই।”
“দয়া করে বোকামি করবেন না।আপনি এতদূর এসেছেন-আমরা আপনার জন্য সঠিক জিনিসটা খুজে বের করতে যাচ্ছি।”তার উৎসাহ বাড়ানোর জন্য আমি বললাম,“আমি চাই আপনি হাসি মুখে পোশাক বদলানোর কক্ষ থেকে বের হয়ে আসুন।”
খদ্দেরকে বিশেষ কিছু খুজে দেওয়ার জন্য আমি অগ্রসর হলাম।আমি ভাবলাম আমি তাকে আমার সবচেয়ে পছন্দের বুটিকে নিয়ে যাব।এর মানে খাড়া রাস্তার ভেতর দিয়ে একটা ভয়ঙ্কর পাহাড় পাড়ি দেওয়া।আমি সাহায্যের জন্য পথচারীদের মিনতী করলাম। তারা সবাই জানতে চাইল “পর্দার পেছনে কি?”যখন আমি বললাম,“একজন মূল্যবান খদ্দের।”তারা বললো,“প্রচার পাওয়ার এটা একটা মজার উপায়।”কিন্তু তাদের অনেকেই পাহাড়ের উপর পর্যন্ত ঠেলতে সাহায্য করার প্রস্তাব দিল।
আমরা সবাই মিলে পোশাক বদলানোর কক্ষটা বহন করে নিয়ে গেলাম।ঢাল যতো খাড়া হল পর্দা ততো দুলতে লাগলো এবং ক্রমান্বয়ে আমি খদ্দেরের আকৃতি বুঝতে সক্ষম হলাম।আর কেউ খেয়াল করছে বলে মনে হল না কিন্তু আমি দেখলাম তিনি আদৌ মোটা নন। তিনি ক্ষুদ্র ছিলেন কিন্তু অতি ক্ষুদ্র ছিলেন না।আরও সঠিক ভাবে বললে,তাকে ঠিক মানুষ বলে মনে হল না।তিনি ছিলেন পর্দায় ঢাকা এক অস্বাভাবিক আকৃতির,যা আমি আগে কখনো দেখিনি।সময় সময় আমি জড়ানো,চোষার মতো, বিরক্তিকর শব্দ শুনতে পেলাম এবং এরপর পর্দা ফুলে উঠলো ও দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেল।সত্যি বলতে আমার কোন ধারনা ছিল না সেটা কি ছিল।কিন্তু এটা আশ্চর্যের বিষয় নয় যে,যেহেতু তার শরীর কাঠামো এত অনন্য যে তিনি কোন পোশাক খুজে পেলেন না যেটা তাকে মানায়।
পাহাড়ের মাথায় পোশাক বদলানোর কক্ষ টেনে নেওয়ায় আমরা জোরে জোরে শ^াস নিচ্ছিলাম এবং পাহাড়ের অন্যদিক দিয়ে নামাই কেবল বাকি ছিল।ওই সময় আমার হাত থেকে দড়ি ফসকে গেল এবং পোশাক বদলানোর কক্ষ খাড়া রাস্তা দিয়ে ঘড় ঘড় শব্দে গড়াতে শুরু করলো।আমি আমার সব শক্তি শেষ করে ফেলেছি এবং এমনকি এটার পেছনে দৌড়ানোর শক্তিও ছিল না।পোশাক বদলের কক্ষ অবিশ^াস্য গতিতে পাহাড়ের নিচের দিকে ছুটে গেল ছোট হতে হতে।
“ম্যাডাম।” যত জোরে পারি আমি চিৎকার করলাম।“আপনি পর্দাটা নিতে পারেন, যদি আপনার পছন্দ হয়।”
একটা হাত পর্দার ভেতর থেকে বের হয়ে আসলো এবং আমার দিকে ধীরে ধীরে অনেকক্ষণ ধরে নাড়তে লাগলো,যেন কেউ একজন ছেড়ে যাওয়া গাড়ির জানালা থেকে আমাকে বিদায় জানাচ্ছে।একসময় এটা থেকে কিছু একটা রাস্তায় এসে পড়লো।যখন আমি এটা তোলার জন্য হাফাতে হাফাতে দৌড় দিলাম,দেখলাম এটা এমন একটা মুদ্রার ব্যাংক-নোট যা আমি চিনি না।
তখন থেকে রাস্তায় হাটার সময় যা কিছু আমার চোখে পড়ে সেগুলোর ব্যাপারে সবকিছুই আমি কল্পনা করেছি।কোন কিছুই আদৌ আমার দুরন্ত স্বপ্নের বাইরে যেতে পারেনি।এবং আপনাকে বলে রাখি,আমার খদ্দেরের দৌহিক গঠন ছিল একপ্রকার নমনীয় ও কার্টুনের মতো বিকৃত,কিন্তু কিভাবে দেখছেন তার উপর নির্ভর করে আপনি এটাকে অভিজাত বলতে পারেন।মাঠে বিছানো বনভোজনে ব্যাবহৃত একটা কম্বলের কথা ভাবুন-আমি বাজি ধরতে পারি ফুল ছাপা পোশাকের মত এতে তাকে বেশ ভালো দেখাবে।