আসাদ চৌধুরীর চোখ, কেবল দৃশ্যমান চোখ নয়, অদৃশ্য বা তৃতীয় চোখের প্রসঙ্গে লিখছি। তৃতীয় চোখে বা নিঃশব্দ দৃষ্টিতে যা দেখেন এক কথায়, সর্বভূক দেখা। দৃষ্টির গভীরে তিনি ধরে রাখেন মানুষ এবং মানুষের ভেতরের মানচিত্র। মানচিত্রের মধ্যে নানামাত্রিক দৃশ্য ও দৃশ্যায়নের পরেও যে ক্লেদ, যে বিবমিষা, যে অন্ধকার, যে আলো, যে দুর্গন্ধ, যে কদর্য ঘুম লুকিয়ে থাকে, সেইসব দিব্যি দেখেতে পান গল্পকার আসাদ চৌধুরী। কেমন করে দেখেন, প্রমাণ চাইতে পারেন পাঠকেরা। আমিও প্রমাণ দিতে প্রস্তুত। আপনারা পাঠ করুন আসাদ চৌধুরীর গল্প মধ্যবিত্ত, কমলা রঙের রোদ, ট্রানজিস্টার, মুকুট, একজোড়া চোখ, নদীর সঙ্গে কথা, মীমাংসা, সংলাপ ও অনুষঙ্গ এবং প্রবাসে শরণার্থীর সুহৃদ।
নয়টি গল্পের মধ্যে অন্য আসাদ চৌধুরীকে আবিষ্কার করবেন এবং বিস্মিত হবেন, আমার মতো, যে আসাদ চৌধুরী তির্যক বিন্যাসে গল্পের এমন আখ্যান বুনতে পারেন তিনি কেনো আরও গল্প লেখেন নি বা কেনো নয় বড় ক্যানভাসে উপন্যাস! ‘মধ্যবিত্ত ও অন্যান্য গল্প’ বইয়ের গল্পগুলো পাঠের পর মনে হয়েছে, আসাদ চৌধুরী গল্প লিখলে অনেককে ছাড়িয়ে উঠে যেতেন, কোথায় যেতেন সেটা আর লিখছি না। কিন্তু তিনি যে অনেককে ছাড়িয়ে অনন্য কত্থক হতে পারতেন, আমি অন্তত নিঃসন্দেহ।
আসাদ চৌধুরীর গল্প কাঠামোর অভ্যন্তরে প্রবেশের আগে গল্প বিষয়ে গল্পকারের ভাষ্যর পাঠ নেয়া জরুরী। কেননা, পাঠ নিলে গল্পের সৃষ্টির জমিন সর্ম্পকে ধারণা নেয়া যথার্থ হবে। তিনি লেখেন: ‘আমার সহপাঠী ও বন্ধু আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের দুই ছাত্র শাকের চৌধুরী আর কায়েস আহমেদের তাগিদে এবং ইলিয়াসের আরেক ছাত্র বিল্পব দাশের হুকুমেই বলা যায়, ‘মধ্যবিত্ত’ গল্পটি লিখেছিলাম ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে। কামাল বিন মাহতাব সম্পাদিত ‘ছোটগল্প’ পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল। একাত্তরে গাফ্ফার ভাই [কথাশিল্পী ও সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী] সম্পাদিত ‘বাংলাদেশ কথা কয়’ সংকলেনর জন্য লিখি ‘কমলা রঙের রোদ’ গল্পটি। মুক্তধারার চিত্তদা [চিত্তরঞ্জন সাহা] এজন্য একশ টাকাও দিয়েছিলেন। এ আমার ক্ষেত্র নয়, বুঝতে দেরী হয়নি। এরপর তো দীর্ঘ বিরতি, কথাশিল্পী বিপ্রদাশ বড়ুয়া ও সালেহ নূর কলেজ থেকে ব্র্যাকের মাসিক গণকেন্দ্রে যোগদান করলেন, গল্পের জন্য ভালো টাকা এবং তাগাদা দেন, তো লিখলাম। কালান্তর অথবা জনান্তিক মনে পড়ছে না, সেখানেও লিখলাম ‘ট্রানজিস্টার’ গল্পটি। গল্পটি পড়ে আমার মামাতো ভাই জানতে চাইলো, ট্রানজিস্টারটি সত্যি বিক্রি করেছি কি না! বুঝুন। কবি আল মাহমুদ জামানের তাগিদে দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতায় একটি গল্প লিখেছিলাম আর বোধহয় দুই যুগ পরে ছড়াকার প্রীতিভাজন আনজির লিটনের তাগিদে ‘মানবজমিন’ এর ঈদ সংখ্যার জন্য শেষ গল্পটি।’
গল্প বিষয়ে আসাদ চৌধুরীর তামাম শোধ। কিন্তু পাঠক হিসেবে তো আমাদের হিসাব লিখবো এখন। প্রশ্ন হচ্ছে- বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণী কি আছে? এক সময়ে ছিল। কোন সময়ে? উপমহাদেশ ভেঙে পাকিস্তান সৃষ্টির পর কিছু সুযোগ-সুবিধা ভাগিয়ে বা পেয়ে হঠাৎ একশ্রেণীর মানুষ, মধ্যবিত্তের একটা তকমায় আটকে যায়। এবং অনেক দিনের না পাওয়ার সুখ চাখতে থাকে। সেই সুখ চাখতে না চাখতেই এসে যায় রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের হাত ধরে চলে আসে ছয় দফা আন্দোলন। ছয় দফার স্ফুলিঙ্গের আগুনে পুড়তে থাকে গোটা বাংলা এবং বাঙালি। শুরু হলো একাত্তরের প্রথম দিকে অসহযোগ আন্দোলন। পরে পরেই নেমে এলো বাঙালির উপর পাকিস্তান মোনাফেক ও হারমাদ বাহিনীর অন্ধ আক্রমণ। সেই আক্রমণ ফুড়ে জলে স্থলে অন্তরীক্ষে লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে উদিত হলো বাংলাদেশ। এবং নতুন সুবিধায় যাত্রা করলো বাঙালির মধ্যবিত্তরা। সেই বাঙালির প্রতিনিধির একজন গল্পকার আসাদ চৌধুরী। তিনি যেখানেই যান আবিষ্কার করেন নিজের মধ্যবিত্তের প্রতিবিম্ব। এবং শৈশবের ধাক্কাটা খেয়েছিলেন মায়ের কাছ থেকে। কি রকম ধাক্কা?
জানালাটা ঠাস করে খুলে গেল। অমনি যে অলকার ফুলে রাজকন্যা চুলে মালা সাজান তার ম ম করা গন্ধে, যে অজানা সুরে তিনি বীণা বাজান, তার আকুল সুরে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম। আমার মুগ্ধ দুই চোখের সামনে চন্দ্রালোকে, কতকালের কে জানে, পুরনো জং ধরা তালা গেল খুলে, ফুলের নিঃশ্বাস লাগলো বুকে। ঠাস করে আম্মা আমার গালে চড় দিলেন। ঘুম জড়িতে কণ্ঠে বললেন, কাণ্ড দেখো, ডর লাগে, অমুক লাগে, সমুক লাগে- এখন বাঁদরামি করে জানালা খুলে আকাশের তারা দেখেছে।
কিন্তু মধ্যবিত্তের চরিত্র কী বলে? বলে, বড় আশা করে জননী জানালায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। স্বপের মধ্যে জানালায় দাঁড়িয়েও মধ্যবিত্তের সুখ খোজা শুরু করেন নায়ক শৈববে। সেই নায়ক মধ্যবিত্তের কুহক, মধ্যবিত্তের জ্বালা, মধ্যবিত্তের সর্বনাশ, মধ্যবিত্তের আদিখ্যেতা ভুলবে কী করে? চেতনার জলে যা একবার গুলে যায়, গলে যায় সেই প্রবহমান জলেই সব ধারণ করে রাখে।
মধ্যবিত্তরা এক আজব চরিত্র। এই আছে এই নেই, মায়া মরীচিকা আর কি! বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গেছেন নায়ক। বন্ধুর স্ত্রী আয়েশার সঙ্গে এক সময়ে সম্পর্ক ছিল। সেই আয়েশার ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। আহা বেচারা আসাদ চৌধুরী! পড়াশুনা শেষ করে দিন বছর বেকার মতিঝিলের রাস্তায় ঘুরেও চাকরি মেলেনি। কিন্তু বাসায় যেতে মধ্যবিত্তের মনন ইমেজে গড়ে ওঠা আসাদ পেয়ে যায় মেরীকে। মেরী আয়েশার বোন। মধ্যবিত্তের কার্নিশ থেকে আসাদের বর্ণনা পড়ুন।
‘আএশার বোন শাড়ি পরেছে, বিস্কুট রঙের, মারাত্মক সে বোন। আমাকে একুট বিশেষভাবে দেখছে।’ বুঝুন ঠ্যালা! পকেট ঠনঠন, বেকার, তাকে আবার মেরী বিশেষভাবে দেখছে। এই না হলে সর্বহারা মধ্যবিত্তের একশো মার্ক পাওয়া চরিত্র? ঘটনাতো এখানেই শেষ নয়। বন্ধুর ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসেছে খালি হাতে, কিন্তু বড়াই ছাড়বে কেনো? বারবার বলছে- ‘বুঝলে আএশা আমি ভীষণ দুঃখিত। যখন মনে হল, ইট ইজ টু লেট, স্কুটারে খুঁজেও কোনো খেলনা দোকান পেলাম না।’
তো এইসব ভান ও ভণিতার মধ্যে খাওয়া দাওয়া হলো। কিন্তু আসাদ মনের মধ্যেবিত্তের বিষবাস্প থেকে মুক্তি পায় না। একেবারে খালি হাতে বন্ধুর ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এলাম? ভেতরের পরাজিত আসাদ এখনকার মুখোমুখি আসাদকে মানতে পারে না। দ্বন্দ্ব, আত্মঅপমান আর গ্লানির টগবগে গরম পানিতে সেদ্ধ হতে হতে যখন তলানির শেষ, ঠিক সেই সময় চলে যায় কারেন্ট। আর এই সুযোগে চলে আসে বন্ধু। বন্ধু আসে অন্ধকারে? নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগে? আসলে এই বন্ধু মধ্যবিত্তের আত্মপ্রতারিত বন্ধু, স্বপ্ন, ছায়া আর ঝরাপাতার মন।
গল্পকার আসাদ চৌধুরীর লেখায় সেই বন্ধুর পরিচয় : এমন সময় আমার বন্ধু এলেন। তার কোনো শরীর নেই, ভাষা নেই, সময় ও স্থান নেই। তার জন্যে মানবভাষায় অদ্যাবধি কোনো স্তোত্র রচিত হয়নি। …তিনি এলেন সেই ঘরে, যে ঘরে আমরা বসেছিলাম। লাল নীল কাগজে মনোরম সাজানো ঘর। …তিনি এসে চরে গেলেন, কেউ দেখলো না। … সেই বন্ধু আমার হাতে চেয়ারের পেছনে রেখে গেল প্যারাম্বুলেটার, যার লোভনীয় বিজ্ঞাপন সম্প্রতি কাগজে বেরিয়েছে। আএশা নিশ্চয়ই দেখেছেন। লোভী রোজগেরে মাগীর চোখ দুটো পাওয়ার আশায় চকচকে হয়ে উঠেছিল, পরে অক্ষমতার এক ফুঁয়ে নিভে নিশ্চয়ই। … আমার হিংসুক মধ্যবিত্ত মন এদের আঘাত দেবার জন্য পাগল হয়ে গেল। …সুন্দর সবুজ রেশমী গদী, নরম কোমল নেভী ব্লু রঙের ঢাকনি, মখমলের মনোরম পাদানি, দুধের মতো সাধা রেশমী ঝালর, সঙ্গীতের মতো ঘন্টি, অর্থাৎ বন্ধুর দেয়া প্যারাম্বুলেটারটা আমি আএশার হাতে দিলাম। আমি লড়াই জেতা কুকুরের মতো বগলেশে জোছনা মাখিয়ে শরীরে সমীরণের পরশ নিয়ে, বেদনার গন্ধকে প্রতিশোধের অগ্নিতে ঢেলে দিয়ে প্রসন্নপুলকিত চিত্তে, হেঁটে কাওরানবাজার থেকে তোপথানা রোডের মেসে চলে এলাম।’
দেখেছেন প্রিয় পাঠক মধ্যবিত্তের মনযাতনার নোংরা প্রকাশ? হ্যাঁ গল্পকার আসাদ চৌধুরীর লেখা গল্পটার সময়কালটা গত শতাব্দীর ষাটের দশকের। পার হয়েছে প্রায় সত্তুর বছর। মহাকালের কাছে হয়তো বেশী সময় নয় কিন্তু বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থান বিকাশ ও পতন এই সময়ের মধ্যে ঘটে গেছে। আমার কথা কেউ মানবেন, কেউ মানবেন না। কিন্তু সত্যি করে বলুন তো, আধুনিক যান্ত্রিক পরিকাঠামোর মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী আছে কি? শ্রেণী এখন দুটো, নিম্মবিত্ত আর উচ্চবিত্ত। বাকী সব চাপে, মাড়িতে, চিড়ার মতো চিড়ে চ্যাপটা হয়ে ঝুলছে বাসের হ্যান্ডেলে, নয়তো পাদানীতে। আরও পরিষ্কার লিখলে, মত্যবিত্ত, মদ্যবিত্ত আর মধ্যবিত্ত এই শ্রেণীর যাতাকলে পিষ্ট সময়ে আসাদ চৌধুরী কেনো এই সময়ে গল্প লেখেন না? কেনো তুলে আনেন না মানুষের অন্তবয়নের বিষাক্ত ধুপকাঠি? এবং প্যারাম্বুলেটার একটা আমিও চাই, যাতে কাউকে দিয়ে নিজে নিম্মবিত্তের গন্ডি পর হতে পারি, যার জন্য ক্রমাগত মাথা ঠুকছি দেয়ালে, আর দেয়ালে। কিন্তু জানি, কখনোই পারবো না। আসাদ চৌধুরীরা যে সময় পার করে এসেছেন, আমরা সেই সময়ের ফ্রেমে বন্দি।
গল্পের পাদটীকা : গল্পের নায়কের ওই বন্ধুটি কে ছিল, যে অন্ধকারে রেখে গেছে প্যারাম্বুলেটার? প্রকৃতপক্ষে, কিছুই ছিল না, ওটা ছিল মধ্যবিত্তের মনোযাতনার ভূত প্রতীক।
ট্রানজিস্টার! আহা এখন কেউ শোনে না। অনেকে জানে না ঘরে ঘরে এই যন্ত্রটা কতোটা প্রিয় ছিল সকাল দুপুর সন্ধ্যায়, রাতে ও গভীর রাতে। বিস্ময় ছিল কোথায় বসে কে গায়, কে নাটকে কণ্ঠ দেয়, কে করে অনুষ্ঠান উপস্থপনা..। সেই এক দিন ছিল, ছিল মধ্যবিত্তর যাতনাও। গ্রামে বা শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বা ঘরে টানজিস্টার ছিল। ট্রানজিস্টার থাকা ছিল একটা ডাট। কিন্তু সেখানেও হানা দেয় মধ্যবিত্ত মন। স্ত্রী জাকিয়া খাতুন আর সিদ্দিকের চমৎকার সংসার। যেমন লেখেন গল্পকার আসাদ চৌধুরী : পানিটা ঠান্ডা। কাচের গ্লাসটা সাবান দিয়ে ধোয়া। ঝকঝকে গ্লাসে পানিটা টলটল করছে। নিঃশ্বাসের তাপে গ্লাসের ভিতর কুয়াশা জমেছে। গ্লাসের অস্পষ্ট কুয়াশায়, পানির কম্পনে জাকিয়ার সস্তা ছেঁড়া, সেলাই করা শাড়িটার অংশ দেখা যাচ্ছে, লাল ব্লাউজের অংশ কাঁপা কাঁপা আঁকা বাঁকা ঠোঁট, পাতলা নাক, এক জোড়া গভীর চোখ, কপাল চুল…. এসব মুহূর্তে মিলিয়ে গেল।’
গল্পকারের, আদি ও অকৃত্রিম দৃষ্টি, সেই দৃষ্টিও তৃতীয় দৃষ্টি। গল্পকার আসাদ চৌধুরীর যেমন আছে তৃতীয় চোখ, তেমনি আছে নির্মাণকলার শিল্পবোধ, ফলে আসাদ চৌধুরীর হাতে গল্প নৃত্য করে মর্মরিত মেয়ের মতো নায়ে পাল তুলে। যেমন ‘ট্রানজিস্টার’ গল্পটা। সেকালে ঘরে ঘরে না হোক বাড়িতে, হাটে বাজারে ট্রানজিস্টার ছিল। সেই সাধারণ একটা ট্রানজিস্টার গলে কেমন একটা চরিত্র হয়ে যায়, মনে হয়, এই মুহূর্তে আমি জাকিয়া খাতুনের ট্রানজিস্টার হয়ে যাই।
টাকার প্রয়োজনে বাসার সেই প্রয়োজনীয় ট্রানজিস্টারটা বিক্রির প্রস্তাব দেয় সিদ্দিক। চমকে তাকায় জাকিয়া বলে, অসম্ভব। তুমি কী পাগল হয়ে গেলে? লজ্জা পেয়ে সিদ্দিক ঘুমিয়ে যায় কিন্তু বিকেলে ঘুম থেকে ওঠার পর জাকিয়াই প্রস্তাব দেয়, দেখো না কতো বলে!
জীবনের প্রয়োজনে ট্রানজিস্টার বিক্রি হয়ে গেলো। ফলাফল? পাশের বাসার পড়ুয়া ছেলেটা বললো: বাঁচলাম। দিন নাই রাত নাই গাঁইয়াদের মতো জোরে জোরে রেডিও বাজতো। ছোট্ট ছেলে আনিস বললো, আম্মা গান। জাকিয়া গুনগুন গাইতে থাকে।’
একটা ছোট গল্পের এমন শিল্পরুপ, মরি মরি আমি আর পাঠ করি নাই। আসাদ চৌধুরী মর্মরিত চিত্তের এমন মর্মভেদী তীরন্দাজ, বুকের সবটুকু কষ্ট নিয়ে তিনি দই পাতার ক্ষমতা রাখেন মধ্যবিত্তের সংসারপাত্রে। যাতনা একটাই, গল্পকার আসাদ চৌধুরী আরও কেনো গল্প লিখলেন না?
মনি হায়দার